রবিউল হোসেন: মানুষের পাশে দাঁড়াতে গেলে যে কোনো রাজনৈতীক নেতা হওয়ার বা হাতে প্রচুর টাকা থাকার প্রয়োজন নেই শুধু নিজের সদইচ্ছা ও মানবিক শুভবুদ্ধিই যথেষ্ঠ সেটা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন দিনহাটার বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সমাজসেবী ডক্টর অজয় মণ্ডল। চিকিৎসা দানের পাশাপাশি সমানভাবে গরীব দুঃখীদের সেবা ও অসহায়দের অবলম্বন তিনি। একদিকে তিনি যেমন তার চেম্বারে দিনহাটার দুঃস্থ অসহায়দের বিনেপয়সায় চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন, ঠিক অপর দিকে সমান ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন যে কোনো সামাজিক কর্মকাণ্ডে। ঝড়, জল, বন্যা বিভিন্ন প্রকৃতির বিপর্যয় হোক কিংবা করোনা মহামারীর কারণে সৃষ্ট লক ডাউনের হাহাকার। যখনই মানুষের সাহায্যের প্রয়োজন এসেছে, নিঃস্বার্থ ভাবে এগিয়ে গিয়েছেন এই মানুষটি। সাহায্য করেছেন নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী। অথচ এই মানুষটির নেই কোনো বাড়তি পরিচয়। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা নন, বা নন কোনো জন প্রতিনিধি। কিন্তু তার পরেও দিনহাটার সকলের কাছেই তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। গ্রামের অসহায় মানুষদের কাছে তিনি দেবদূত, আদরের ডাক্তারবাবু।
সুদূর দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা ডক্টর অজয় মণ্ডল ২০১২ সালে এমবিবিএস পাস করেই মনস্থির করেন এই পেশাকে অবলম্বন করেই তিনি দাড়াবেন অসহায়দের পাশে। তাইতো ২০১৬ তে চাকরিতে যুক্ত হওয়ার সময় শহুরে ঝাঁ চকচকে জীবনকে পরিত্যাগ করে মানবসেবার ব্রতে ব্রতী হয়ে কর্মস্থল হিসেবে বেছে নেন দিনহাটার প্রত্যন্ত অঞ্চল ওকরাবাড়ির প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রকে। আপাদমস্তক গ্রামীণ ভাবধারার এই ডাক্তারবাবু উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন গ্রামের মানুষদের অসহায়তা, চাহিদা। চাকরিজীবনের শুরু থেকেই জনহিতকর কাজের জন্য তার জনপ্রিয়তা ক্রমশ পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে। এরপর দিনহাটায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীকালে মানুষের সাহায্য করা এই সব নেশা তাকে এতটাই চাপিয়ে বসে যে তিনি একবিন্দু চিন্তা না করেই ছেড়ে দেন সরকারি চাকরি। আর তার সাথে সাথে আরও বেশি মনোযোগী হন মানব সেবায়।
দুস্থদের জন্যে চেম্বারে ফ্রী চিকিৎসা, সেনাদের ফ্রী চিকিৎসা, বয়স্ক নাগরিক, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত দের বিশেষ ছাড়, ঈদ, পূজো সহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের আগে বস্ত্রদান, অভুক্তদের অন্নদান সহ একাধিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ডাক্তারবাবু ইতিমধ্যেই পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছ থেকে। তার কর্মকাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে বিশেষ তথ্যচিত্র। তবে এইসব কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি তিনি একজন ভালো মাপের লেখক। সম্প্রতি প্রকাশিত তার লেখা বই অনিন্দিতা ও দুই পৃথিবী পাঠকসমাজের প্রশংসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এইসব একাধিক গুণের জন্যে ডাক্তার অজয় পরিনিত হয়েছেন মণ্ডল দিনহাটা মহকুমার অসহায়দের দেবদূতে।
0 Comments