রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জী, আসানসোল: রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের সাংগঠনিক স্তরে রদ বদলের পর তৈরি হয়েছে তৃণমূলের নতুন জেলা ও ব্লক স্তরের কমিটি। আর সেই নতুন কমিটি গঠনের রবিবার প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হল আসানসোলের কল্যাণপুরের একটি বেসরকারি হল-এ। আর এদিন তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের আইন ও পূর্ত মন্ত্রী মলয় ঘটক, আই এন টি টি ইউ সির সর্ব ভারতীয় সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, আই এনটিটিইউসির সভাপতি অভিজিৎ ঘটক, তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায়, যুব সভাপতি কৌশিক মন্ডল, জেলার মহিলা সভাপতি মিনতি হাজরা, আসানসোল পুর প্রশাসক অমরনাথ চ্যাটার্জী, আসানসোলের কনভেনর ভি শিবদাসন দাশু সহ তৃণমূলের অন্যান্য নেতৃত্বরা ছিলেন। আর এদিনের এই সম্মেলন থেকে ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে পুষ্পস্তবক দিয়ে সম্বর্ধনা দেয় উদ্যোক্তারা।
এদিকে সম্মেলন থেকে অভিজিৎ ঘটক বলেন, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসকে শক্তিশালী করতে গেলে আমাদের ট্রেড ইউনিয়ন কে সবথেকে বেশি শক্তিশালী করতে হবে। পাশাপাশি আমাদের যে শাখা সংগঠন গুলি আছে সেগুলিও আমাদের দলের এক একটা স্তম্ভ। আর এই স্তম্প গুলি যদি শক্তিশালী না হয় তাহলে দলের সংগঠন কোনদিন শক্তিশালী হতে পারেনা।
আর এদিন বিধান উপাধ্যায় বলেন, পশ্চিম বর্ধমান ও দুর্গাপুর এটা পুরোটাই শিল্পাঞ্চল এখানে প্রচুর শিল্প আছে এখানে প্রধান সমস্যা গোষ্ঠী সংঘর্ষ। গোষ্ঠী সংঘর্ষ না করে মলয় ঘটকের নির্দেশ প্রতিটি ইন্ডাস্ট্রিতে দুজন করে নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া ঠিক হবে। একজন নেতা দশটা ইন্ডাস্ট্রি দেখছে তাতে আমার মনে হয় না কোন অসুবিধা হবে। তৃণমূল কংগ্রেস কঠিন পরিশ্রম করে এসেছে। আর সেই দলে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখুন।
এদিকে এদিন বক্তব্যর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকেও কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। এদিন তিনি বলেন দেশ বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী সমস্ত সরকারি সম্পত্তি ও কলকারখানাও বিক্রি করার পরিকল্পনা করে ফেলেছেন। আসানসোলের একাধিক কল-কারখানা ও কয়লা খাদান বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করে ফেলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন দেশ বিক্রি করতে দেব না সেই দেশ বিক্রি আটকাতে গেলে সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ট্রেড ইউনিয়ন খুব গুরুত্বপূর্ণ। আসানসোল দুর্গাপুর বিভিন্ন ধরনের ১০০০ এর ওপর ইন্ডাস্ট্রি আছে পশ্চিম বর্ধমান জেলায়। আগামী দিনে আমাদের এই ট্রেড ইউনিয়নকে সুস্থভাবে চালাতে হবে ওই ইন্ডাস্ট্রি গুলিতে।
অন্য দিকে ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় তার বক্তব্যে বলেন, মলয় ঘটক দীর্ঘদিন ধরে আমাদের রাজ্যে শ্রমদপ্তর এর মন্ত্রী ছিলেন এখন যিনি শ্রমদপ্তর এ মন্ত্রী আছেন। তিনিও সাহায্য করছেন আই এন টি ইউ সির প্রচুর ইউনিয়ন কয়েক বছর ধরে রিটার্ন জমা দিচ্ছে না। খুব তাড়াতাড়ি দেখতে হবে কথায় এই ইউনিয়নের রিটার্ন জমা দিচ্ছে না। অবিলম্বে রিটার্ন জমা করতে হবে। পাশাপাশি তিনি বলেন বিজেপি বলছি ৮ ঘণ্টার পরিবর্তে ১২ ঘন্টা কাজ করতে হবে। এখনো এমন সংস্থা আছে যেকোনো সময় যাকে তাকে বাদ দিয়ে দিতে পারে। সেখানে কোন অধিকার থাকে না শ্রমিকদের। পাশাপাশি তিনি আরো বলেন ৪০ তম ইউনিয়ন কে বাদ দিয়ে ৪ টে নেবার পর তৈরি করা হয়েছে এটা ভয়ঙ্কর ব্যাপার। এখানে একাধিক বড় বড় কারখানা আছে। নির্বাচনে পরাজিত হয়ে বিজেপি সরকার এই কারখানা গুলিকে বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। বিজেপি সরকার ৪০০ রেল স্টেশন, ১৫০ টা ট্রেন, দার্জিলিংয়ের টয় ট্রেন ও ২৬ হাজার ৭০০ কিলোমিটার ন্যাশনাল হাইওয়ে পুরোটাই বিক্রি করে দিতে চলেছে এই সরকার। পাশাপাশি কলকাতার হলদিয়া সহ ৯ টা বন্দর বিক্রি করার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই সমস্ত বিক্রি বন্ধ করতে গেলে একটা ইউনিয়ন থাকতে হবে।
পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, একাধিক নামিদামি কলকারখানা বিক্রি করে দিচ্ছে আমরা ৩০ তারিখের মধ্যে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবো কীভাবে তার রূপরেখা গঠন হবে অভিজিৎ ঘটক এর নেতৃত্বে এই নিয়ে আমরা আই এন টি টি ইউ সি আন্দোলনের নানবো। শুধু চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস শুধু নয় আমাদের দেশে রেল ব্যবস্থা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম পৃথিবীর কোথাও পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম বেসরকারি করণ হয় না এই বিজেপি সরকার এই পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম কে বিক্রি করে দিতে চাইছে। "আক্রমণ যত ধারাল হবে প্রতিবাদ প্রতিরোধ তত্ত্ব সানিতা" ভবিষ্যৎ শেষ পর্যন্ত মানুষের। ২০২৪ সালে বিজেপি সরকারকে হারানো না গেলে গোটা দেশ টাকায় বিক্রি করে দেবে।

0 Comments