প্রসূতির মৃত্যুকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল পিঠাকেয়ারী হাসপাতালে, বিক্ষোভ পরিবারের সদস্যদের

 



রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জী, সালানপুর: প্রসূতি মৃত্যুকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল সালানপুর ব্লকের পিঠাকেয়ারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। জানা গেছে হাসপাতালের গাফিলতির কারণে  এক প্রসূতি মহিলার মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার এমনি অভিযোগ তুলল মৃতা মহিলার পরিবারের সদস্যরা। আর এই মৃত্যুর পরেই পিঠাকেয়ারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মুখ্য গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে মৃতার পরিবারের সদস্যরা। এদিন দুপুরে ওই প্রসূতির পরিবারের লোকজনেরা এসে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনার সঠিক তদন্ত চেয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে।

আর ওই মৃতা প্রসূতী মহিলার দাদা দীনেশ রায় জানান গত ২১ তারিখ মঙ্গলবার রাত্রী ৭-টা নাগাদ তার কাকার মেয়ে আন্না রায়কে প্রসূতির জন্য আনা হয় পিঠাকেয়ারী হাসপাতালে। কিন্তু তাকে ভর্তি করার পরেও হাসপাতালে থেকে কোনো রকম চিকিৎসা করা হয়নি বলে এদিন অভিযোগ জানান মৃতার দাদা।তিনি আরো জানান পরের দিন সকালে পরিবারের সদস্যরা এসে চিকিৎসা জন্য আবেদন করে। আর তার পরেই ওই প্রসূতিকে আসানসোলের জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার জন্যে আবেদন জানায় ওই প্রসূতির পরিবার। কিন্তু হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার তাদের জানান যে এখানে থাকার জন্যে এবং চার ঘণ্টা সময় চেয়ে নেয় তাই পরিবারের লোকেরা ডাক্তারের কথামতো পিঠাকেয়ারী হাসপাতালেই চিকিৎসার জন্য রাখে কিন্তু অনেক সময় পেরিয়ে যাবার পর প্রায় রাত্রি একটা নাগাদ হাসপাতাল থেকে তাদের ফোন করে জানায় যে তাদের প্রসূতি মহিলাকে দ্রুত  জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে হবে। তাই তড়িঘড়ি প্রসূতি মহিলার পরিজনেরা মঙ্গলবার রাত্রি দুটো নাগাদ চিতালডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা আন্না রায় (২৩) নামের ওই প্রসূতিকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে জরুরি বিভাগে ভর্তি করানো হয়।কিন্তু  প্রসূতি মহিলার শারীরিক অবস্থা ভাল ছিলোনা। আর আসানসোল জেলা হাসপাতালে গিয়ে তারা চিকিৎসকের কাছে জানতে পারে যে ওই প্রসূতি মহিলার পেটে থাকা বাচ্চা অনেক আগে মারা গেছে। আর অনেকটা দেরি করে ফেলেছে তাই মায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে প্রসূতী মহিলা কে প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করে আসানসোল জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। কিন্তু ভর্তির কিছুক্ষণ পরেই প্রসূতি মহিলা আন্না রায় মারা যায়। আর এর পরেই পরিবারের লোকজন চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে পরের দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে পিঠাকেয়ারী হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। মৃতার পরিবারের লোকজনের অভিযোগ কর্মরত নার্স ও ডাক্তার আন্নাকে ঠিকমত চিকিৎসা প্রদান করেনি তাছাড়া তার পরিজনদের গালিগালাজ করা হয়। তাছাড়া এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত নার্স বেশিরভাগ সময় মোবাইল নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। এদিকে বিক্ষোভের খবর শুনেই সালানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক পবিত্র কুমার গাঙ্গুলি এবং রূপনরায়নপুর ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক রাহুলদেব মন্ডল, কল্যানেশ্বরী ফাঁড়ির আধিকারিক উৎপল ঘোষালের নেতৃত্বে ছুটে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। পাশাপাশি ছুটে আসেন সমাজসেবী ভোলা সিং, সালানপুরের বিএম ওএইচ সুব্রত সিট। তারা এসে গোটা ঘটনার শুনে পরিজনদের সঠিক বিচারের আশ্বাস দেয়। আর এর পরেই পরিবারের সদস্যরা শান্ত হয়ে বিক্ষোভ তুলে নেয়।

Post a Comment

0 Comments