বিক্রম কর্মকার, ত্রিপুরা: কিছু দিন পর পরই প্রকাশ্যে আসছে দক্ষিন ত্রিপুরা জেলা বিলোনিয়াতে ইটভাট্টাগুলির ভিতরে যে ভয়ঙ্কর অবস্থা, তারই চিত্র। যেমন নেই শিশুদের বেড়ে ওঠার পরিবেশের, তেমন প্রতিটি ইটভাট্টায় ছোট ছোট শিশুদের দিয়ে করানো হচ্ছে শিশুশ্রম। নেই শ্রম দপ্তরের সেই দিকে কোনো হেলদোল,একই ভাবে শিশুদের স্বাস্থ্য বা খেলাধুলার জন্য যে ব্যবস্থা থাকার দরকার বা অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে পড়াশুনার জন্যে যে ব্যবস্থা থাকার কথা সেদিকে লক্ষ্য নেই সমাজ কল্যাণ দপ্তরের। ফলে ইট ভাট্টার শ্রমিকের শিশু সন্তানরা অনাদরে অবহেলায় লেখাপড়া থেকে বঞ্চিত হয়ে রয়েছে। এ বিষয়ে কোন ধরনের খেয়াল নেই প্রশাসনের । যার দরুনে কিছু দিন পর পরেই দুর্ঘটনা ঘটছে এবং মৃত্যু ঘটছে বেঘোরে শিশু থেকে বৃদ্ধ। শ্রমিকের যেমন মৃত্যু হচ্ছে তেমনি শ্রমিকদের অবুঝ সন্তানরাও মৃত্যুর কোলে ঢলে পরছে অব্যবস্থার কারণে। তেমনই একটি ঘটনা ঘটল খেলতে খেলতে নালার মধ্যে পড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু দেড় বছরের শিশু রাহুল কুমার চৌহানের। বাবা রাদেল চৌহান। মা কালি ইট ভাট্টার শ্রমিক। বাড়ির বিহার। ঘটনা দক্ষিন ত্রিপুরা জেলা বিলোনিয়া চিত্তামারা মা কালী ইট ভাট্টায়। এই ঘটনাকে ঘিরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ইট ভট্টার শ্রমিকদের মধ্যে।
মা বাবা যখন ইট তৈরির কাজে ব্যস্ত শিশুটি তখন খেলতে খেলতে কখন পাশবর্তী নালায় পড়ে মৃত্যু হয় তা কেউ জানেনা। কাজ শেষে শিশুটিকে খুঁজতে থাকে মা-বাবা এবং অন্যরা । পরবর্তী সময়ে নালায় পড়ে থাকতে দেখে শিশুটিকে বিলোনিয়া হাসপাতালে নিয়ে আসলে, কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করে। বিলোনিয়া হাসপাতালে ময়না তদন্তের পর দেড় বছরের শিশু রাহুল কুমার চৌহানের মরদেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবারের লোকজন সহ ইট ভাট্টার অন্যান্য শ্রমিকেরা। বিলোনিয়ার ইট ভাট্টার মালিকেরা যেমন ইচ্ছা তেমন চালাতে গিয়ে অসহায় শ্রমিকদের অবস্থা বেহাল। সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা না করে, দিব্বি মর্জ্জি মত কাজ চলছে ইটভাট্টাগুলিতে। প্রশাসন নির্বিকার , নেই হেলদোল। ফলে প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে সাধারণ জনগণের মধ্যে।
0 Comments