নাজিম আক্তার,হরিশ্চন্দ্রপুর,২২সেপ্টেম্বর:
বিজেপি করার অপরাধে কাটমানি না দিলে মিলবে না আবাস যোজনার তৃতীয় কিস্তির টাকা।এমনটাই গুরুতর অভিযোগ মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তিলডাঙ্গি এলাকায়। অভিযোগের তীর মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শাসক দলের অঞ্চল সভাপতি পঙ্কজ দাসের বিরুদ্ধে।তিনি আবার ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্যা নীতা দাসের স্বামী।এই নিয়ে দুই গ্রামবাসী ইতিমধ্যেই ওই অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।
তারা ওই তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে স্থানীয় বিডিও সহ জেলাশাসক,মহকুমা শাসক ও মুখ্যমন্ত্রীকেও অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে খবর।
সূত্রে খবর মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা নরহরি দাস ও পালানু দাস অভিযোগ করেছেন এই গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা নীতা দাসের স্বামী শাসকদলের অঞ্চল সভাপতি পঙ্কজ কুমার দাস আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ইতিমধ্যে ১৫,০০০ টাকা করে নিয়েছে। এইভাবে টাকা দিয়ে দু কিস্তির টাকা পাওয়া গিয়েছে। এখন তৃতীয় কিস্তির টাকা চাইতে গেলে জানা যাচ্ছে বিজেপি করার অপরাধে তারা তৃতীয় কিস্তির টাকা পাবেন না। অথবা সেই টাকা পেতে গেলে আরো বেশি পরিমাণ টাকা কাটমানি দিতে হবে। যদিও তার নামে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী তথা শাসকদলের অঞ্চল সভাপতি পঙ্কজ কুমার দাস। অন্যদিকে কাটমানির জনক হলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলে কটাক্ষের সুর চড়িয়েছেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। বিষয়টি শুনেছি, এ বিষয়ে আমরা দলের উর্দ্ধতন নেতৃত্বকে জানিয়েছি, বিজেপি হরিশ্চন্দ্রপুরের বুকে নোংরা রাজনীতির খেলছে পাল্টা তৃণমূল হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক সভাপতি মানিক দাস। এই নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপির চাপানউতোর।
অভিযোগকারী বাসিন্দা পালানু দাস জানান আবাস যোজনায় নাম এসেছিল দুই কিস্তির টাকা পেয়েছি। সে দুই কিস্তির টাকা পেতে গেলে ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছিল পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী পঙ্কজ কুমার দাসের হাতে। এখন তৃতীয় কিস্তির টাকা পেতে গেলে বলছে তোরা বিজেপি করিস তাই আরো ৫ হাজার টাকা লাগবে। টাকা না দিলে ঘর পাওয়া যাবে না। তাই আমরা ওর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি।
আরেক বাসিন্দা নরহরি দাস জানান আমার জব কার্ড নিয়ে সমস্যা ছিল। সেটা ঠিক করতেও আমার কাছ থেকে পয়সা দাবী করা হয়েছে। এছাড়াও আবাস যোজনা ঘরের দুই কিস্তির টাকা পেয়েছি। কিন্তু বাকি কিস্তির টাকা চাইতে গেলে পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী পঙ্কজ কুমার দাস টাকা দাবি করে বসেছেন। বছর দুয়েক আগে আমরা তৃনমূল করতাম। এখন বিজেপিতে যোগদান করেছি, তাই আমাদের উপর এভাবে অত্যাচার করছে। অভিযোগ জানানোর পরে হুমকি দিচ্ছে পঙ্কজ কুমার দাসের লোকজন।
এ প্রসঙ্গে মহকুমাশাসক কল্লোল রায় জানান এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। যদি ঘটনা সত্যি হয় তাহলে অবশ্যই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যদিও এ প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী তথা অঞ্চল সভাপতি পঙ্কজ কুমার দাস জানান সম্পূর্ণ অভিযোগ ভিত্তিহীন। টাকা নেওয়ার কোন প্রশ্নই নেই। ব্লক থেকেই তৃতীয় কিস্তির টাকা ছাড়া হয়নি তো আমি কি করবো।
এদিকে এই ঘটনাকে নিয়ে কটাক্ষের সুর চড়িয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। উত্তর মালদার বিজেপির সাংসদ খগেন মুর্মু জানান তৃণমূলের সংস্কৃতি হয়ে গেছে কাটমানি। জনগণের জন্য কোনো প্রকল্প পেতে গেলে দিতে হচ্ছে কাটমানি। এই কাটমানির জনক হলেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর নিজেই।
যদিও পাল্টা এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক সভাপতি মানিক দাস জানান বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে আমরা দলের উর্দ্ধতন নেতৃত্ব কে জানিয়েছি। যা ব্যবস্থা নেওয়ার দল নেবে।



0 Comments